তিন গোয়েন্দা Tin Goyenda by Rakib Hasan – ভলিউম ১০৪/২ রকিব হাসান, শামসুদ্দীন নওয়াব- বাংলা গল্প Book Review
তিন গোয়েন্দা by Rakib Hasan বইটি কিশোর থ্রিলার গল্প । বইটি প্রথম প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালে।
তিন গোয়েন্দা হলো তিন বন্ধুর একটা গোয়েন্দা সংস্থা। তিন বন্ধুর নামগুলো হলো – কিশোর পাশা, মুসা আমান, রবিন মিলফোর্ড। তিন গোয়েন্দার ১০৪/২ এই ভলিউমে তিনটি গল্প আছে। গোরস্থানে সাবধান, নেকড়ের বনে, খাবার চোর। এই তিনটি গল্প নিয়ে এই ভলিউমটি সাজানো।
তিন গোয়েন্দা (Tin Goyenda by Rakib Hasan) – গোরস্থানে সাবধান
এই ভলিউমের প্রথম গল্পটি হলো গোরস্থানে সাবধান। কাহিনী রচনা করেছেন কাজী শাহনূর হোসেন এবং তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করেছেন শামসুদ্দীন নওয়াব।
গল্পের শুরুতে গ্রীনহিলস শহরের একটি প্রাচীন গোরস্থানের এক সমাধিস্তম্ভের ছবি দেখাচ্ছেন মুসার মা। তিনশো বছরের পুরোনো কবরের মাথায় স্থাপন করা পাথরখন্ড মানে হেডস্টোন। গরমের দিন হয়াতে আকাশ মেঘলা ছিল। ঝড় আসবে তাই মুসার মা জানতে চাইলো কিশোর আর রবিন বাড়ি যাবে কিভাবে? তখন মুসা বললো কিশোরকে নেওয়ার জন্য তার চাচা আর রবিনকে নেওয়ার জন্য তার আন্টি আসবে। রাতে প্রচন্ড বৃষ্টিতে মুসা বিছানায় শুয়ে শুয়ে বিভিন্ন কথা ভাবতে থাকে। হঠাৎ একধরনের শব্দ শুনতে পেলো মনে হলো শাটারের শব্দ। কিন্তু তার পরেই মনে হলো আমাদের বাড়িতে তো কোনো শাটার নেই!
তার মা তাকে ডেকে বললো ক্রসরোডের পাশের গোরস্থানটায় রাতে বেশ কিছু হেডস্টোন পড়ে যাওয়াই তাকে সেখানে যেতে হচ্ছে। তার মা মুসাকেও সাথে নিলেন। “তিন গোয়েন্দা -Tin Goyenda by Rakib Hasan”
তারা যখন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলো তখন একজন লোক এগিয়ে এসে বললো তার নাম রয় ম্যাকয়। তার মা কয়েকজন লোকজন নিয়ে এসে হেডস্টোন গুলো ভ্যানে ভরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিলেন। আমরা চলে আসবো এই সময় মা আমাকে ডেকে দেখালো ঘাসের উপর ছোট একটা হেডস্টোন পড়ে আছে। ওটাতে খোদাই করে লিখা ছিলো মিশেল রবার্টস। অনেক দেড়ি হওয়াতে হেডস্টোনটাকে আমরা বাড়ি নিয়ে আসলাম।
কয়েকদিন পরে রাত তিনটার দিকে সব অন্ধকার হয়ে যায় কারেন্ট না থাকায় হেডস্টোনটা যেখানে রাখা ছিলো সেখানে আলো জ্বলছে, কিন্তু কয়েকদিন আগেইতো মা ওটাকে ইউনিভার্সিটিতে দিয়ে এসেছে। আর দেরি না করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরার পরে দুম দুম করে শব্দ শুনতে পেলো। শব্দটা বাইরে কোথাও থেকে আসছে না , কাছে কোথাও থেকে আসছে । তারপর উপলব্ধি করলো শব্দটা আসছে তার ক্লজিট থেকে।
সকালে মা ফোনে কার সাথে যেনো কথা শেষ করে তাকে বললো ম্যাকয় নামের কাউকেই চেনে না গির্জার কেউ। মা বললো আজ ভিলেজ রেকর্ড দেখতে যাবো সাথে মুসাকেও নিয়ে গেলো। সেখানে একটা দলিল দেখতে গিয়ে মা অবাক হয়ে আমাকে দেখালো সেখানে লেখা রয় ম্যাকয় …..
তারমানে আমরা ভুতের সাথে কথা বলেছি। কাল রাতের ঘটনার সাথে ম্যাকয়ের কোনো সম্পর্ক আছে কি ! যদি থাকে তাহলে ম্যাকয়ের সাথে ভুতের সংখ্যা কত হতে পারে? “তিন গোয়েন্দা -Tin Goyenda by Rakib Hasan”
কিশোর আর রবিনকে ফোন করে বাসায় আসতে বললাম রাতে থাকার জন্য। ওরা আসার পর সব কথা ওদের বলার পর ওরা অপেক্ষা করতে থাকলো। হঠাৎ ঘর ঠান্ডা হয়ে গেলো এবং প্রদীপটা নিভু নিভু হলো। শব্দ শুরু হয়ে গেলো । ক্লজিটের দরজাটা খুলে দেখলাম এক কোঁকড়াচুলো মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার পরনে প্রাচীন পোশাক পায়ের পাতা পর্যন্ত ঝুল।
তার দিকে হাত বাড়িয়ে মেয়েটি ডাকছে জন। তখন সে জানতে চাইলো জন কে? তুমি কে? মেয়েটি বললো সে মিশেল , জন তার ভাই । সে তার মা ভাই কাউকে পাচ্ছেনা। তারপর পিছিয়ে এসে যখন ওরা দুজন এগিয়ে গিয়ে দেখলো তখন কিছুই দেখতে পেলোনা।
ওপাশের দেওয়ালে একটা ওপেনিং আছে , যে ফাঁকটার মধ্যে দিয়ে ভ্যাকিউম ক্লিনারের মাধ্যমে শুষে নিচ্ছে ওকে। ঘোড়ার গাড়িতে একটা লন্ঠন জ্বলছে। পিছনে একটি মহিলা বসে আছে কিন্তু তার চোখ নেই। সে বুঝতে পেরেছে যে সে গোরস্থানে এসে গেছে। সে চেঁচিয়ে বললো ‘আমিও ভুত হয়ে গেছি। তারপর একটা কন্ঠ কথা বললো এবং তাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলো। তারমানে ইনি ম্যাকয়। তাকে সে বললো সে বাড়ি যেতে চায়। তিনি বললেন দরজাটা খুঁজে নিতে, যে টা দিয়ে আমরা সবাই যাই।
তিনি জানালেন মিশেল তার হেডস্টোনটার সাথে তাদের বাসায় চলে গেছিলো। পৃথিবীর মায়া ছেড়ে এখানে থাকতে তার একজন বন্ধুর দরকার। দরজার ভিতরে ঢুকতেই কিশোর আর রবিন তাকে টেনে বের করে নিলো। তার আগে ম্যাকয় বললো ভুল করে যেন অন্য দরজায় যেও না।
পরেরদিন সকালে ডুগিকে সব বললাম। আজ রাতে বন্ধুরা আর ডুগি থাকবে। রাতেরবেলা গ্রীনহাউসে ঢুকলো এবং আলোটার দিকে তাকিয়ে রইলো। তখনি ম্যাকয়ের কথা মনে পড়লো ডাকলাম কিন্তু দেরি হয়ে গেছে। ডুগি ততক্ষনে অদৃশ্য হয়ে গেছে, অন্য দরজায় ঢুকে গেছে সে।
আর এদিকে কিশোর ভুতের গেম থেকে বের করার চেষ্টা করছে তাদের পরের মুভটা! অন্যদিকে তারা বুঝতে পারলো রবিনও পরে গেছে। ওরা দুজনও গেলো। তারা ডুগিকে খুঁজে পেলো আর রবিনকে খুজতে লাগলো। একদল ছায়া মুর্তি মুখ ফ্যাকাসে চোখ নেই তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। ম্যাকয়কে ডাকলাম তিনি সাহায্যের জন্য আসলেন এবং জানালেন তারা চোর-ডাকাত ছিলো তাই এখানে এসে দৌড়াই। তিনি বললেন তাড়াতাড়ি করো দরজাগুলো চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে তোমাদের চিরদিনের জন্য আমাদের সাথে থেকতে হবে।
তারপর রবিনকে খুঁজে তাড়াতাড়ি করতে লাগলো দরজাগুলো খুঁজতে। ম্যাকয় যে দরজাটা দেখিয়ে দিলো রবিন আসতে রাজি হলো না এরমধ্যে কিশোরকে ভুতেরা টেনে নিয়ে যাচ্ছে, আর সে চেঁচিয়ে ডাকছে আমাদের। কিশোরকে ওদের হাত থেকে নিয়ে আসবো,ঠিক সেইসময় মিশেল আবার ডাকলো। ম্যাকয় বললো তোমার মায়ের কাজের ফলে মিশেলের মাকে খুঁজে বের করা গেছে এবং আমরা ওকে বাড়িতে ওর মায়ের কাছে দিয়ে আসবো।
তারপর অদৃশ্য ফোকরের মধ্যে দিয়ে ঘরে চলে এসেছে। সবাই ক্লান্ত, সকালে কথা বলবে বলে সবাই ঘুমিয়ে পড়লো। তারা বাসার কাউকে কিছুই বলে নি কারণ কেউ তাদের কথা বিশ্বাস করতোনা।
সর্বশেষে তিন গোয়েন্দা (Tin Goyenda) বলেছে যারা এমন বিপদে পড়েছে তাদের পরামর্শ নিতে। মাঝরাতে ক্লোজিটে এমন শব্দ হলে শুধুমাত্র অপেক্ষা করতে। তাদেরও তাই করা উচিত ছিলো।