Gouripur Junction Humayun Ahmed-গৌরীপুর জংশন হুমায়ূন আহমেদ
Book Review
Gouripur Junction Humayun Ahmed- গৌরীপুর জংশন হুমায়ূন আহমেদ এর বই পরিচিতি
বইয়ের নাম :- গৌরীপুর জংশন ।
লেখক :- হুমায়ূন আহমেদ।
প্রকাশক :- এ কে নাছির আহমেদ সেলিম।
প্রকাশনী :- কাকলী প্রকাশনী।
দাম(Price) :- ১০০টাকা।
Gouripur Junction Humayun Ahmed – হুমায়ূন আহমেদ এর বইটির নাম দেখে প্রথম ভাবনাঃ
গৌরীপুর জংশন দেখে মনে হয়েছে যেহেতু একটি জায়গার নাম আর জংশন বলতে যেহেতু রেললাইনের সাথে সংযোগ কিছু বোঝায় তাই সেই জায়গায় মানে গৌরীপুর ইস্টিশনেই কিছু কাহিনী আছে বলে হয়েছে।
Gouripur Junction Humayun Ahmed-হুমায়ূন আহমেদ এর বইটিতে কতটি পৃষ্ঠা রয়েছে?
বইটিতে মোট ৫৬ পৃষ্ঠা রয়েছে।
গৌরীপুর জংশন হুমায়ূন আহমেদ এর বইটিতে কতটি প্রচ্ছদ আছে?
বইটি কোন প্রচ্ছদ আকারে লেখা নয়। আমরা দেখে থাকি হুমায়ূন আহমেদ এর বই প্রায় সবসময় এক একটি বই একটি গল্প দিয়েই শেষ হয়।
গৌরীপুর জংশন হুমায়ূন আহমেদ এর বইটি কি নিয়ে লিখা?
গৌরীপুর ইস্টিশনের একজন কাজ করা কুলি জয়নাল। তার দেখা এবং তার সাথে ঘটে যাওয়া ইস্টিশনের ঘটনাগুলোই তিনি বলেছে এই বইটিতে।
Gouripur Junction Humayun Ahmed বইয়ের সারসংক্ষেপঃ
কয়েকদিন হল রাতে জয়নালের ঘুম ভেঙ্গে গেলে আর রাতে ঘুমাতে পারছে না। সেদিন রাতেও তাই হল, শিসের শব্দে। তখন হঠাৎ তার ইস্টিশনের বজলুর কথা মনে হল। এই শীতে তার একটাও গরম কাপড় নেই। আবার শিসের শব্দ হতেই সে কম্বলের থেকে মাথা বের করে দেখলো বজলু তার পায়ের কাছে একটা চটের বস্তার মধ্যে শুয়ে আছে। ওরে এখান থেকে চলে যেতে বললে ও উঠে চলে যায়। বজলুর আপন চাচা ওরে গৌরীপুর ইস্টিশনে ফেলে গেছে।
জয়নাল ইস্টিশনে কুলির কাজ করে একবার একজন তাকে তুই করে বলে আর ট্রাংক, ব্যাগ ধরিয়ে দেয়। রাস্তা পার হওয়ার পর জয়নালকে তিন টাকা দিলে সে টাকা না নিয়েই চলে আসে। কারন মাঝে মাঝে তার দেখতে ইচ্ছা করলে হতভম্ব হইয়ে গেলে মানুষের কেমন লাগে! তিন মণ আটার বস্তা পিঠে পরে যাওয়ার পর সে আর তেমন কাজ করতে পারে না, পা ফেলতেই পারে না ঠিকমতো। বজলুকে তাড়িয়ে দিয়ে জয়নাল আর ঘুমাতে পারলো না।
Gouripur Junction Humayun Ahmed
সে আবার সেই শিসের শব্দ শুনতে পেল। তাকিয়ে দেখল বজলু ঠিক আগের জায়গায় শুয়ে আছে। ওরে কম্বলের নিচে আসতে বলায় সে চলে আসলো। আর আরাম করে ঘুমালো। তখন ট্রেনের শব্দ পাওয়াতে জয়নাল বলল এইসময়তো ট্রেন আসে না, মালাবাবুর কাছে থেকে শুনতে হবে। তিনি এখানেই চাকরি করেন। ইয়াদ হল ময়মনসিংহের একজন ঠগ। তিনি পুলিশকে বিক্রি করে দিলেও পুলিশ তা জানতে পারবে না। একবার তিনি এলেন ইস্টিশনে। ভৈরব লাইনের সেকেন্ড ক্লাস একটি কামরায় তিনি উঠলেন। সবাই বলতে লাগল রিজার্ভ। কিন্তু কথার জালে ফেলে তার লোকেরা দুই লাগেজ সোনা নিয়ে চলে যায়। পরে পুলিশ এসে জয়নালদের মত কাজ করা মানুষদের ধরে নিয়ে যায়।
মোবারক হল ইস্টিশনের কুলিদের সর্দার। সবাইকে তিনদিন পর ছারলেও তাকে সাতদিন পর ছারা হল। কিন্তু তার অবস্থা খুবই খারাপ। এর কয়েকদিন পরে হাশেম সব দায়িত্ব নেয়,আর মোবারককে মেরে ফেলে। হাশেম এসে জয়নালকে নম্বরী কুলির দরখাস্ত করতে বলে। সে একচল্লিশ নাম্বার কুলি হইয়ে যায়।
এইসব ভাবতে ভাবতে ভোর হলে ট্রেনের শব্দে জয়নাল ওইদিকে গেলে একজন মহিলা তাকে ডেকে ঠান্ডা পানি আর গরম পানির জন্য টাকা দিল সাথে দুইটা পট দিল। কিন্তু জয়নাল পানি না নিয়ে এসে পটগুল বিক্রি করে শেই টাকা দিয়ে খেয়ে বজলুর জন্য খারার আনলো। তারপর পরিমলের দোকানে গিয়ে চা খেয়ে আসলো।
গৌরীপুর জংশন হুমায়ূন আহমেদ
জয়নাল রাস্তায় হাটতে হাটতে তার পুরোনো স্মৃতিগুলো ভাবতে লাগলো। তার ছোট একটা সংসার ছিল, একটা বউ ছিল, বউটা কালো হলেও চেহারা অনেক সুন্দর ছিল। সব ভালোই চলছিল কিন্তু তিন মণ আটার বস্তা পায়ে পরাতে জয়নাল যখন কিছুই করতে পারে না তখন তার বউ চলে যায়। কারন খাওয়াতে পারে না কিছু দিতে পারে না তাই। সেদিন হঠাৎ অনুফার কথা মনে হওয়াতে সে দেখা করতে যাবে বলে ঠিক করে। জয়নাল নতুন একটা শার্ট আর জুতা কিনে অনুফার কাছে গেল।
অনুফার আর জয়নাল কথা শেষ করে যখন জয়নাল আসতে চাইল তখন অনুফার তার জন্য চা, কালোজাম আর নিমকি নিয়ে এসে তাকে খেতে বলে। খেয়ে জয়নাল চলে আসার সময় অনুফা তাকে রাস্তায় অনেক দূর এগিয়ে দেয়।
এই সবই আগের কথা। জয়নাল যখন গেল তখন সেখানে অন্য একটা মেয়ে। অনুফা কোথায় জানতে চাইলে মেয়েটা বলে ঢাকায় চলে গেছে। তখন জয়নালের মনটা একটু খারাপ হয়। সে অনুফার জন্য কেনা জিনিসগুলো মেয়েটাকে দিয়ে আসে সাথে একশো টাকাও দেয়।
সেখান থেকে ফিরে এসে জয়নাল দেখল ইস্টিশনে অনেক পুলিশ। ইস্টিশনের মালগাড়ি থেকে দশ বস্তা চিনি চুড়ি হয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসা শেষ হলে বাইরে এসে দেখে বজলুকে যেখানে রেখে গেছে সে সেখানেই বসে আছে? তারপর বজলু বলে হাশেম না কি তাকে খুঁজছে। পুলিশের সাথে কথা বলে জয়নাল রমজানের কাছে গেলো। সে বলল কে খুন করেছে সে জানে। সে হাশেমের কথা বলল। একবার খুন করলে পরে তার নেশা হইয়ে যায়। তাই সে আবার খুন করেছে।
রমজানের ঘর থেকে বের হইয়ে জয়নাল আর বজলু রেল লাইনের দিকে হাটতে গেলে হাশেম তাদের ধরে সকালের কথা বলতে লাগল। যে এত দামি টাকার জিনিস এত সস্তায় না দিয়ে আর একটু দাম করলেই পারতো। তারপর সে চলে গেলে জয়নালের কি যেন হল সে কাঁদতে লাগলো। যেদিন তার বাবা মারা গেল সেদিনও সে কাদে নি। কিন্তু আজ কি যেন হল জয়নালের! তার বাবা তাকে এখানে নিয়ে এসেছিল তার মরণ মনে হয় এখানেই হবে এই কথাই ভাবতে লাগলো। এরপর সে হাটতে থাকে গৌরীপুর জংশনের দিকে, এত কাছেই কিন্তু জয়নালের মনে হচ্ছে অনেক দূরে!