কেউ কেউ কথা রাখে ( Keu Keu Kotha Rakhe) by Mohammad Nazim Uddin

Photo of author

By Nj Disha

কেউ কেউ কথা রাখে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন – Keu Keu Kotha Rakhe

Book Review

Keu Keu Kotha Rakhe by Mohammad Nazim Uddin

কেউ কেউ কথা রাখে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর বই পরিচিতি

বইয়ের নাম :- কেউ কেউ কথা রাখে।
লেখক :- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ।
প্রকাশনী :- বাতিঘর প্রকাশনী ।
দাম (Price):- চারশত আশি টাকা মাত্র।

 বইটির নাম দেখে প্রথম ভাবনাঃ

বইটির নাম দেখে রোমান্টিক মনে হলেও পরোক্ষনে মনে হলে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বইয়ে কোন রহস্যময় কিছু থাকবে না এইটা কি করে হয়!!

কেউ কেউ কথা রাখে (Keu Keu Kotha Rakhe) বইটিতে কতটি পৃষ্ঠা রয়েছে?

বইটিতে ২৮৫টি পৃষ্ঠা রয়েছে।

কেউ কেউ কথা রাখে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর বইতে কতটি প্রচ্ছদ আছে?

কেউ কেউ কথা রাখে বইটিতে ৪০টি অধ্যায় সহ শেষে একটি ‘অবশেষে’ নামক অধ্যায় দিয়ে শেষ করা হয়েছে।

কেউ কেউ কথা রাখে বইটি কি নিয়ে ?

আসলে বইটির প্রথম দিকের কাহিনী পরে মনে হচ্ছিল কেউ ই কথা রাখতেই পারলো না।কিন্তু কাহিনী শেষ হয়ে যাবার পর বুঝা গেল কি করে কথা রাখা যায়।

কেউ কেউ কথা রাখে বইয়ের প্রাসঙ্গিক বিষয়ঃ

বইটির মুল কাহিনীতে লেখক না থাকলেও।মুল ঘটনার সাথে লেখকের জীবনের সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়। প্রথম দিকের ঘটনা লেখকের জীবনকে আরোও ভালো করতে পারতো।কিন্তু হঠাৎ কি করেই যেন কি হয়ে গেল লেখকের জীবনে। তবে মুল ঘটনার কাহিনীটা শেষ পযন্ত অসাধারণ ছিল।

কেউ কেউ কথা রাখে (Keu Keu Kotha Rakhe) বইয়ের সারসংক্ষেপঃ

অধ্যায় ১

দরজার সামনে এসে লেখক দশ- পনেরো মিনিট পায়চারি করেও বুঝতে পারে না, কোনদিকে যাবেন তিনি। একটি পঁচিশ- ছাব্বিশ বছরের ছেলে তাকে সাহায্য করে লিফটে পৌঁছে দিল, সাথে কত তলায় যেতে হবে সেটাও বলে দিল। ভেতরে ঢুকতেই ঘরের বামকোনে চোখ আটকে গেল এক নারীকে দেখে। সবটা দেখে মনে হচ্ছে যেন দুই যুগ আগের ছবির মতোই স্থির হয়ে আছে। সে এতদিন পরেও লেখকে চিনতে পেরেছে। কথা হবার সময় লেখক বলে তোমার বয়স যেন সেই পয়ত্রিশেই আটকে আছে। কিন্তু সে বলে তুমি একদম তোমার খেয়াল রাখো না, তোমাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

লেখক তাকে জিজ্ঞেস করে ইংরেজি ছেড়ে ল নিয়েছিলে কি করে? তখন সে উত্তরে বলে সেখানে গিয়ে ক্রেডিট মিলে যাওয়াই আর কোথাও যায়নি। তারপর জানতে চায় লেখক কেন বিয়ে করে নি এখনোও। লেখকের বলতে ইচ্ছে করছিল তোমার মত কাউকে পাইনি বলে রামজিয়া শেহরিন। কিন্তু বলে না কথা টা। এখানে আসার আসল কারনটা এখন শেহরিনকে বলবে লেখক। শেহরিনকে একটি বই দিয়ে বলে এই বই এখনো প্রকাশ করা হয়নি। আর তোমাকে উপহার করার জন্যও নিয়ে আসিনি। পরলেই বুঝবে। বইটির শিরোনাম কেউ কথা রাখেনি। বইটির কয়েক পেইজের লিখা পরে শেহরিন বলে এটা কি মিলির খুন নিয়ে লিখা?

অধ্যায় ২ – একটি খুন (Keu Keu Kotha Rakhe)

চাদরে থাকা লাশের সামনে থেকেও সাহিস হচ্ছে না চাদরটা খুলে দেখার। তিনি একজন অ্যাসিসটেন্ট সাব- ইন্সপেক্টর। তার সিনিয়র হায়দার এসে চাদরাটা তুলে দিতেই একটি নগ্ন মেয়ের লাশ দেখা গেল। হায়দার অনেক মেধাবী একজন মানুষ।  তিনি কিছু সময়ের মধ্যেই বলে দিলেন যে ধষন কাহিনী এইটা, আর পরিচিত কেউ। কিন্তু জোর করে করা হয়েছে।

কারন ব্যাখ্যা হিসেবে বলেন টেবিলে এক কাপ চা আর বিস্কুট রয়েছে। আর লাশটা বেড রুমে।প্রাণ বাচানোর জন্য রুমে আসলেও বাচতে পারে নি। ঘটনার সময় মেয়েটির স্বামী কোথায় ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি অফিসে ছিলেন। এসে দেখে স্ত্রী খুন হয়ে পরে আছে। এখন তার স্বামীকে ওষুধ দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে।

হায়দার তখন বলেন স্ত্রী যখন খুন হয় তখন বেশির ভাগ সময় প্রাইম সাসপেক্ট হয় স্বামী। তিনমাস আগেই তাদের বিয়ে হয়েছিল। দুই মাস আগে এই বাসায় তারা আসে। স্বামী ব্যাংকে চাকরি করে, স্ত্রী সবসময় একাই থাকে বাড়িতে। তাদের বাড়ির দোতলার লোকজন কিছু হয়তো জানে, কিন্তু মুখ খুলছে না। হায়দার বলেন আরোও কথা বলতে হবে, জানতে হবে আরোও। হায়দার আরোও একটি কথা বলেন যে, ভিক্টিমের কাছে পিস্তল ছিল, তাছাড়া এমন শান্ত ভাবে কাজটা করা সম্ভব ছিলনা।

অধ্যায় ৩

 

রামজিয়া লেখকে প্রশ্ন করে, মিলির ঘটনাটা নিয়ে কেন লিখলে? লেখক বলে এই ঘটনার জন্য ক্কত মানুষের জীবনটাই পাল্টে গেছে সেটা লিখবো নাহ! রামজিয়া জানতে চাইলো বইটি প্রকাশের আগেই কেন তাকে দিয়ে পরতে আসলো। লেখক জানালো এই বইয়ের একটি চরিত্র তুমি।তোমার কোন আপত্তি আছে কি না! আর মিলির স্বামীর সাথে কথা বলারও ইচ্ছা আছে। সে কেন অদ্ভুত আচরণ করে, সেটা জানার।

অধ্যায় ৪ – ছবি কথা বলে (Keu Keu Kotha Rakhe)

মিলির স্বামীর সাথে কথা বলে লেখক বুঝলেন তার মানসিক অবস্থা ভালো না। মিলির স্বামী বলছেন, যে তিনি খুনির ফাসি চান না। তাকে জেলে রেখে মারতে বলেন। মিলির স্বামী বলে দোতলার বাচ্চাটা মিলির সাথে এসে থাকে। তাদের টিভি নেই। এখানে এসে টিভি দেখে। তিনি আরোও বলেন যে মিলির এক বান্ধবী আর এক বোন ছাড়া কেউ আসে না। হায়দার সেই বাচ্চার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে কিন্তু তার মা-বাবা কথা বলত্র দেয় নি। মিলি ছবি তুলতে খুব পছন্দ করতো। কয়েকটা গ্রুপ ফটোতে একটা ছেলে মিলিত দিকে তাকিয়ে আছে খেয়াল করলে ছেলেটা কে জানতে চাইলে মিলির স্বামী জানে না বলে। তিনি বলেন মিলির খুব ক্লোজ বান্ধবী রামজিয়া বলতে পারবে। তার থেকে রামজিয়ার নাম্বার নিয়ে লেখক চলে গেলেন।

অধ্যায় ৫

রামজিয়াকে ফোন করে ছেলেটার কথা জানতে চাইলে সে না দেখে চিনতে পারছে না জানায়। বলে বিকেলে তার বাড়িতে আসতে। তার বাড়িতে গেলে সে বলে ছেলেটা মিলির কেমন যেন আত্নীয় হয়। তার নাম ইমতিয়াজ শরিফ। রামজিয়া বলে ইমতিয়াজ কলেজে থাকতে মিলিতে একটি প্রেমপত্র দিয়েছিল।কিন্তু তাদের মধ্যে কিছুই হয় নি। কারন কোনকিছুই মিল ছিল না তাদের। রামজিয়া এতকিছু জানার কারন হল রামজিয়া আর মিলি দুজনের একই স্কুল-কলেজ এমনি একই ইউনিভার্সিটিতে পড়েছে। রামজিয়া বলছে তার মনে হচ্ছে ইমতিয়াজই কাজটা করেছে। তার চোখ গুলোই বলে দিচ্ছে। ইমতিয়াজের সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে তার এক বান্ধবীর বিয়ে হয়েছে তারই এক কাজিনের সাথে।  রামজিয়া তার কাজিনের থেকে ইমতিয়াজের ঠিকানা নিয়ে লেখকে দিলেন। আর বললেন যেন আপডেট তাকে জানায়। (Keu Keu Kotha Rakhe)

অধ্যায়  ৬

রামজিয়া তাদের বাড়িতে নিয়ে গেল। সেখানে তেমন কিছুই পরিবর্তন চোখে পরলো না। কিন্তু ভিতরে ঢুকেই সেখানে আগে টিভি ছিল এখন নেই। ঠিক তার উপরে মিলি আর রামজিয়ার সেই ছবিটি টানানো। রামজিয়া বলে সে থেকে এখন দেশেই থাকবে।  তার স্বামীর সাথে ডিভোর্স হয়েছে। মেয়ে ওখানে বিয়ে করেছে। রামজিয়ার ওখানে একা লাগে, কিন্তু এখানে একা থাকলেও একা লাগে না ওখানের মতো।রামজিয়া বলে তার কোন ইচ্ছা ছিল না দেশের বাইরে থাকার। কিন্তু ঘটনাচক্রে থাকতে হয়েছে। লেখকের ইচ্ছা হয়েছিল সেই কারনটা কি? কিন্তু বলাত সাহস পায়নি।

অধ্যায় ৭ – সন্দেহভাজন

লেখক হায়দারকে নিয়ে ইমতিয়াজের বাড়িতে গেলে তার মা জানায় সে ঠিকমতো বাড়িতে থাকে না। কোনক কাজ করেনা, শুধু পলিটিক্স করে। হায়দার ইমতিয়াজের মাকে  বলে  তারা পাসপোর্ট এর জন্য এসেছে। বাসা থেকে বের হয়ে হায়দার বলেন ইমতিয়াজই কাজটা করেছে।

অধ্যায় ৮ (Keu Keu Kotha Rakhe)

মিলির স্বামী ব্যাংকে কাজ শেষ করে প্রায়ই আসে থানায়।কিন্তু তাকে বলার মত কিছুই থাকে না। রামজিয়ার সাথে ইমতিয়াজকে নিয়ে অনেই পুরাতন কথাই হলো।

অধ্যায় ৯ – সন্দেহ

মিলিদের বাড়ির দোতলার বাচ্চাটির সাথে কথা বলে হায়দারকে জানায় সেদিন মিলির স্বামীকে দেখে সে। বাচ্চাটির মা বলে একজন লোক ছাতা নিয়ে মুখ আড়াল করছিল। এই সময় মিলির সবাম ছাড়া আর কে হবে ভেবে আর কিছু তারা বলে নি।  মিলির স্বামী মিনহাজের সাথে কথা বলে জানতে পারা গেল আসলে তার ছাতাটা কালো ছিল না। লাল-নীল-সাদা ছিল। মিনহাজ বলে এটা মিলির ছাতা। মিনহাজ ছাতা ব্যবহার করে না।তার ভালো লাগে না।

অধ্যায় ১০

মুদি দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা গেল ইমতিয়াজ কয়েকদিজ হল ঘুর ঘুর করছিল বাড়ির আশেপাশেই। এরমধ্যেই আবার একদিন বইয়ের দোকানে রামজিয়ার সাথে দেখা হয়ে গেল। সে যে বই খুজছে সেটি লেখকের কাছে ছিল। পরেরদিন লেখক বইটি রামজিয়াকে দিয়ে তার একটি বই নিয়ে চলে গেল। (Keu Keu Kotha Rakhe)

অধ্যায় ১১

বইটি লিখার আগে একবার ইমতিয়াজের খোঁজে তার বাড়িতে গেলে তার বোন জানায় সেই পচাত্তর থেকে ইমতিয়াজের আর কোন খোঁজ নেয়। যদিও বা কথাটা মিথ্যা বলেই মনে হয়েছিল। লেখক চায় মিলির কেসটা আবার রিওপেন হোক।কিন্তু কেউ কি তা চাইবে, রামজিয়া বলে। আর ওপেন হলেও ইমতিয়াজকে পাওয়া না গেলে তো আর কেসটা আগানো সম্ভব না।

অধ্যায় ১২ – শিকার পর্ব

ইমতিয়াজকে খোঁজার জন্য হায়দার কাশেম নামের একজনকে লাগিয়ে দিল। হায়দার বলে কাশেম হলো ঢাকার হাড়ির খোজও জানে।কিছুদিন পর কাশেম একটি ঠিকানা দিয়ে বলে সেখানে লেকু নামের একজন থাকে। ইমতিয়াজ তার সাথে কিছুদিন ঘোরে। সেখানে গিয়ে জানা গেল, ইমতিয়াজ সেখানেই ছিল। উপরে থেকে তাদের দেখে পালিয়ে গেছে। হায়দার অনেক আফসোস করলো, এত সহজে পাওয়া যাবে ভাবে নি। আবার পেয়েও হারিয়ে গেল।

অধ্যায় ১৩ – অভ্যাসের দাস (Keu Keu Kotha Rakhe)

হায়দার বলে কাল ফুটবল খেলার আবাহনী টিমের খেলা আছে। আর ইমতিয়াজ সেখানে আসবেই। সে তার এই অভ্যাস পরিবর্তন ক্ক্রতে পারবে না। বিকেলে স্টেডিয়ামে গিয়ে হায়দার আর লেখক তাকে খোঁজার একটা প্ল্যান করলো।

অধ্যায় ১৪ – খেলা

স্টেডিয়ামে হাজার হাজার মানুষের ভিতরেও ইমতিয়াজকে ধরতে পারলেন হায়দার। তার জন্য তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।

অধ্যায় ১৫ – স্বীকারোক্তি

থানায় এসে ইমতিয়াজকে প্রশ্ন করা হলে সে এমন নাটক করে বলে যে সে জানেই না মিলি খুন হয়েছে। কেন জানে না জানিতে চাইলে বলে, মিলি খুন হবার পর সে বাড়ি যায়নি। তখন হায়দার বলে তারমানে মিলি কোন দিন খুন হয়েছে সেইটা ইমতিয়াজ জানে। ওই দিন ইমতিয়াজ কোথায় ছিল জানতে চাইলে সে বলে চারটার দিকে পার্টি অফিসে ছিল। যখন মিলির খুন হয় তখনই সে ওখানে গেছিলো।

নাটকটা ভালো করেই সাজানো হয়েছে। ইমতিয়াজকে প্রশ্ন করে কোন উত্তরই তার পক্ষে আসে না।এটাই প্রমান হচ্ছে যে, সেই খুনি। কথায় কথায় ইমতিয়াজ হায়দারকে বলে উঠল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি কথা। তারপর হায়দার অনেক রেগে মার শুরু করে দিয়েছিল ইমতিয়াজকে। ইমতিয়াজকে ক্ষেপানোর জন্য হায়দার অনেক ধরনের কথা বললে। অবশেষে ইমতিয়াজ স্বীকার করে খুন সেই করেছে।

অধ্যায় ১৬ (Keu Keu Kotha Rakhe)
রামজিয়ার সাথে সাথে কথায় কথায় লেখক জানতে পারে মিনহাজ এখনও বিয়ে করে নি। লেখক রামজিয়াকে বলে তার ঠিকানাটা দিতে।

অধ্যায় ১৭ – উদযাপন আর উপহার
মিনহাজকে খবরটা দিলে সে অনেক খুশি হয়। আর বলে এই মামলা কত দিন চলবে? বিচার হবে কবে? সঠিকভাবে না বললেও কিছু বলে কথাটা ঘুরিয়ে ফেলেছিল লেখক।তারপর রামজিয়াজেও জানিয়ে দেয় ঘটনাটা।

অধ্যায় ১৮
সন্ধ্যা হয়ে গেল তাই লেখক রামজিয়াকে বিদায় দিয়ে নিজের বাড়ি চলে গেল। রামজিয়া আবারো তাকে আসতে বলে, তার কার্ডটা দিয়ে দিল। আর লেখক বইটি তাড়াতাড়ি পড়া শেষ করতে বলে চলে আসে। (Keu Keu Kotha Rakhe)

অধ্যায় ১৯ – বাঙালী জীবনে রমণী
রামজিয়ার দেওয়া সেই বইটি পড়তে পড়তেই টেবিলে রেখে টয়লেট থেকে এসে লেখক দেখে হায়দার বইটি দেখছে। লেখকে দেখতে পেয়ে হায়দার রামজিয়ার লিখা কথাগুলো পড়তে থাকে। এই নিয়ে হায়দার অনেক সময় মজা করে লেখকের সাথে।

অধ্যায় ২০
রামজিয়ার বইটি ফেরত দিতে গিয়ে লেখক শুনলেন রামজিয়াকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে। লেখকের অনেক খারাপ লাগে কথাটা শুনে। বেশ কয়েকদিন পর রামজিয়া থানায় এসে লেখকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। বলে লেখকের আগের বইটি ফেরত দিতে আসেছে।

অধ্যায় ২১
রামজিয়াকে বাংলা একটি বই দিতে গিয়ে তাকে দেখতে আসা ছেলেটার সম্পর্কে জানা গেল।রামজিয়ার  ছেলেটাকে পছন্দ হয়নি। কাতনটা অবশ্য সে বলে নি।

অধ্যায় ২২ – থার্টিফাস্ট আর হুইস্কি

থার্টিফাস্ট এর পার্টিতে রামজিয়া লেখকে ইনভাইট করলে লেখক বলে তার রাতের ডিউটি আছে। পরে রামজিয়া নলে সময় পেলে রাত এগারোটার পরে যেকোনো এক সময় হলেও যেন আসে। পরে লেকজক হায়দারের থেকে এই থার্টিফাস্ট এর পার্টির কথা জানতে চাইলে তিনি তাকে বুঝায় বলে। (Keu Keu Kotha Rakhe)

অধ্যায় ২৩
রামজিয়া ফোন করে বলে আগের রাতে সে দুটো পযন্ত পরেছে। আরাও কিছু বাকি আছে।আজ তার সময় নেই। তাই লেখক কে কাল আসতে বলে। চা খেতে খেতে দুজন বই নিয়ে গল্প করবে।

অধ্যায় ২৪ – অমানিশা

থানার ওসি সাহেব হায়দারকে বলেছে ইমতিয়াজকে জামিন দিতে। সেই কথা শুনে হায়দার ওসির কলার চেপে ধরেছে। এই নিয়ে থানায় সকালবেলা তেই অনেক চিৎকার চেচামেচি হয়ে গেল।এই ঘটনার কয়েককদিন পরেই ইমতিয়াজ জামিন পেয়ে গেল। সে খবর শুনে মিনহাজ থানায় এসে প্রশ্ন করাতে কারো কিছুই বলার ছিলো না।

অধ্যায় ২৫

ওসি সাহেব লেখককে ডেকে বলেন হায়দার কে এইসব থেকে দূরে থাকতে। কারন ইমতিয়াজ তার ও ক্ষতি করতে পারে যেকোন সময়।এইসবের মধ্যে আর না যেতে বলে ওসি।  রামজিয়াও ফোন করে বলে দেখা করতে। সে এইসব কিছুই জানতে চাইছিলো।

অধ্যায় ২৬

ইমতিয়াজ জামিন পেয়েই তার কাজ শুরু করে দিয়েছে। সাক্ষী গুলোকে তার পক্ষে নিয়ে নিতে শুরু করেছে। এখন আদ কেউ তার বিপক্ষে কথা বলতে চাইছে না। (Keu Keu Kotha Rakhe)

 

অধ্যায় ২৭

আর কোন পথই খোলা রইলো না। তাই হায়দার লেখককে বলে যাতে রামজিয়া ইমতিয়াজের বিপক্ষে সাক্ষী দেয়। রামজিয়ার সাথে দেখা করে কথাটা বলতেই সে রাজি হয়ে গেল।কথা শেষে লেখক রামজিয়াকে এগিয়ে দেওয়ার সময় দেখতে পেলেন ইমতিয়াজ রামজিয়াকে ডাকছে।বলছে এখন দেখি পুলিশ নিয়ে ঘুরছো,ব্যাপার কি?!

অধ্যায় ২৮

এরমধ্যে একদিন মিনহাজ এসে জানানো তাদের বাড়ির দোতলার লোকজন চলে গেছে বদলি হয়েছে বলে। কিন্তু মিনহাজ তার অফিসে গেলে দেখতে পেল তার বদলি হয়নি। সে মিনহাজকে এরিয়ে চলছে।

অধ্যায় ২৯

রামজিয়ার সাথে দেখা হলে সে জানায় ইমতিয়াজ কয়েকদিন হলো তাদের বাড়ির সামনে ঘুরছে। তাদের দুজনকে একসাথে দেখে ইমতিয়াজ  পিস্তল বের করে গালাগালি করলো লেখককে। তারপর চলে গেলো

অধ্যায় ৩০

থানায় এসে এই ঘটনা হায়দার কে জানালে তিনি বলেন জিডি করতে। প্রাননাশের চেষ্টা করা হয়েছে লেখককে, তার জিডি। সন্ধ্যায় হায়দার তাকে ধরে নিয়ে আসলেও দিন পনেরো পরে ঠিকই সে ছাড়া পেয়ে গেল। এদিকে রামজিয়ার সাথে যোগাযোগও কমতে থাকে। একদিন ফোনে কথা হলে সে বললো তার বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য জোর করা হচ্ছে। (Keu Keu Kotha Rakhe)

অধ্যায় ৩১ – কালো দিন

লেখকের রাতের ডিউটির সময় ওয়াকিটকিতে কল আসলো হায়দার মদ খেয়ে মারামারি করছে। তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। থানা থেকে লেখক তাকে তার বাড়িতে নিয়ে গেলে জানতে চাইলেন। এইসবের কারন। তখন হায়দার বলেন সে তার স্ত্রীকে একটা চড় মেরেছে। তাই সে চলে গেছে। লেখকে বলেন তার স্ত্রীকে তার কাছে নিয়ে আসতে। লেখক ভাবিকে নিয়ে বাসায় এসে দেখলেন ঘরের সবকিছুই উল্টোপাল্টা। আর বিছানায় রক্ত সহ হায়দারের নিথর দেহটা পরে আছে।

অধ্যায় ৩২ – ঘোর

লেখক হায়দারের মৃত্যুর ঘোর থেকে বের হতেই পাচ্ছিলেন না। এই কাজটা ইমতিয়াজই করেছেন।কিন্তু লেখক প্রমান করতে পারলেন না।কয়েকদিন থানায় না গিয়ে ঘরেই মদের প্রতি আসক্ত হয়ে গেলেন। এর মধ্যে একদিন রামজিয়া এসে লেখককে দেখে বললো একি অবস্থা করেছেন নিজের! আরও কি সব বলছিল কিন্তু লেখকের কিছুই মনে নেই।

অধ্যায় ৩৩ – তুমি!

জ্ঞান ফিরলে রামজিয়া বলে লেখক তাকে তুমি করে বলেছে। এখন থেকে তারা দুজন দুজনকে তুমি করেই বলবে। লেখককে আবার থানায় গিয়ে কাজ করতে বলে রামজিয়া। সাথে এইটাও বলে কয়েকদিন পর লেখকের জন্মদিনে দেখা করতে। পরের দিন থানায় গিয়ে লেখক দেখে তার বদলি হয়ে গেছে।

অধ্যায় ৩৪ – নিহত ভোর

পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেবার পর কি নিয়ে জীবীকা করবে সেই কথাই লেখক ভাবছে। পরের দিন জন্মদিনের টাকা জোগার করার জন্য তার এক বন্ধুর বাড়ি গেলে সেখানেই রাত থাকলেন।সকালে উঠে জানা গেল বঙ্গবন্ধুকে মেরে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে তা বাড়িতেই। এইসব ঘটনার জন্য ১৫ই আগস্ট সেইদিন আর লেখকের জন্মদিন পালন করা হয়নি। অবশ্য সেদিনের পর আর কখনই জন্মদিন পালন করেন নি।

অধ্যায় ৩৫ – পলায়ন পর্ব

কোনকিছু না বুঝেই শেষ পর্যন্ত গ্রামের বাড়ি চলে গেলেন লেখক। সেখানে তার বাবার চাকরি করা স্কুলে ইংরেজি পড়াতে শুরু করলেন। তিন মাস পরে ঢাকার এসে তার কাগজ পত্র নিয়ে হায়দারের বউয়ের সাথে দেখা করে জানতে পারলেন তার বাচ্চা হবে। হায়দারের খুনের কয়েকদিন পরেই তিনি এই খবরটি বুঝতে পারেন।

লেখক তার জিনিস নিতে গেলে জানান রামজিয়া কয়েকবার এসেছিল।আর লাস্ট বার এসে একটি চিঠি দিয়ে গেছে। চিঠি পড়ার আগেই রামজিয়াকে কল করলে জানতে পারে সেদিন তার হলুদ আর পরের দিন বিয়ে। লেখক বাড়ি গিয়ে চিঠিটা পরে জানতে পারে রামজিয়া লিখেছে সে বিয়ের পর বিদেশে চলে যাবে, তার ইচ্ছা না থানা সত্ত্বেও।  সে কেন লেখকের কাছে এসেছিল তাও সে জানে না।

অধ্যায় ৩৬

সকালে রামজিয়া ফোন করে মিনহাজের ঠিকানা দিলে লেখক তার বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে গেল। মিনহাজের সাথে দেখা হলে তিনি চিনতে পারলেন না। পরিচয় দেওয়ার পরে অনেক কথা হবার পরে, তিনি জানতে চাইলেন এখানে আসার কারন। লেখক তার গল্পের পান্ডুলিপিটি মিনিহাজকে দিয়ে বলেন এটি মিলিকে নিয়ে লিখা। প্রকাশের আগে তাকে দেখানোর জন্য নিয়ে এসেছে।

কিন্তু মিনহাজ একেবারেই না করে দিলেন। চলে যাবার সময় লেখক বললেন আসলে মিলির ঘটনার সাথে আপনার সহ আরোও অনেক মানুষের কাহিনী জরিয়ে আছে। হায়দার সাহেবের খুন পর্যন্ত হয়ে গেছে।তাই এই বইটি না লিখে তিনি থাকতে পারেন নি। আর তিনি বইটি প্রকাশও করবেন। মিনহাজ তাকে ভিতরে ডেকে বললেন আপনি এবং হায়দার অনেক করেছেন এই কেসটার জন্য। এরজন্য হায়দার সাহেবকে প্রান পর্যন্ত দিতে হয়েছে।এইসব এখন বাদ দিন। কারন ইমতিয়াজ আর বেচে নেই।

অধ্যায় ৩৭ – খুনের গল্প

মিনহাজ বলে ঢাকায় ব্যাংক শেষে একদিন সে বাড়ি যাওয়ার পথে ইমতিয়াজকে দেখে তাকে ফলো করে। সে একটি বাড়িতে ঢুকলে। মিনহাজ কয়েকদিন ইমতিয়াজকে ফলো করে। তারপর তাকে একদিন রুমালে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে গাড়িতে করে রেললাইনে নিয়ে গিয়ে ট্রেন আসার সময় তিনটা গুলি করে মেরে ফেলে।পরে লাশটা একটা খালে ফেলে দেয়।মিনহাজ বলে আপনি না থাকলে কখনই মিলির খুনিকে জানতাম না। তাই আপনাকে সত্যিতা বলে ঋণ শোধ করে দিলাম।

অধ্যায় ৩৮ – খুনির সন্ধান

ঢাকার বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে মিনহাজের সব কথা গুল লেখক মিলাতে বসলে কেমন জানি মনে হলো কিছু কথা গোপন করছে সে।সে গোপন সত্যটা জানার জন্য আবার মিনহাজের বাড়ি গিয়ে লুকিয়ে থাকলে দেখা গেল রাতে সে খাবারের ট্রে হাত এ নিয়ে গোয়াল ঘরের দিকে গেল। সেখানে লেখক তার পিছু গিয়ে দেখে মাটির নিচে সিড়ি দিয়ে গেলে একিটা ঘরে খাচায় আটকা একটা প্রাণী। লেখক ভালো করে দেখে বুঝলো আসলে খাচায় ছিল ইমতিয়াজ।এত বছরে তাকে এখানে আটকে রেখে একটি পশুর মত লাগছে।

অধ্যায় ৩৯ – যাবজ্জীবন

ইমতিয়াজকে দেখে মিনহাজ শুধু একটা কথাই বলে যে, সে মিলির কবরে প্রতীঙ্গা করেছে ইমতিয়াজকে জেলে রেখে মারবে। ইমতিয়াজ লেখককে দেখে বলে, সে জানে তাকে বাচানোর জন্য সে আসে নি। মিনহাজ যেন তাকে মেরে ফেলে এইটাই যেন বলে। অনেক তো হয়েছে আর কত! দুই যুগ হল মিনহাজ ইমতিয়াজকে বাচিঁয়ে রেখেছে।

অধ্যায় ৪০

সবটা রামজিয়াকে জানানোর পরে সে বলে এখন এন্ডিংটা ও তো পাওয়া গেল তাইলে বই টা লিখে প্রকাশ করে ফেল। রামজিয়া বলে সে এই কথাগুলো শোনার আগেই নামগুলো বদলে দিয়েছিল। আর বইটির বাম ‘কেউ কথা রাখে নি’ না রেখে নাম হবে ‘কেউ কেউ কথা রাখে’।

অবশেষে – কেউ কেউ কথা রাখে (Keu Keu Kotha Rakhe)

লেখক আর রামজিয়া ঠিক করে মিনহাজ থাকা অবস্থায় তারা বইটি প্রকাশ করবে না। কিছুদিন পরেই খবর এলো মিনহাজ আত্মহত্যা করেছে এবং একটি চিরকুট রেখে গেছে লেখকের জন্য। তারপর বইটি প্রকাশ করলে সেদিন হায়দার ভাইয়ের বউ তার ছেলেকে নিয়ে সেখানে আসেন। এবং লেখক তাকে অটোগ্রাফ দিল বইটির উৎর্সগ করা পৃষ্ঠাটিতে।

 

Bangla Book Review
এই বইটির অডিও গল্প শুনতে চাইলে Dishas Storyplate

Leave a Comment