অরণ্যের প্রতিশোধ – শামসুদ্দীন নওয়াব Tin Goyenda

Photo of author

By Nj Disha

তিন গোয়েন্দা Tin Goyenda , ভলিউম ১১৪ – শামসুদ্দীন নওয়াব – বাংলা গল্প Book Review

 

অরণ্যের প্রতিশোধ - শামসুদ্দীন নওয়াব Tin Goyenda

পুরো একঘন্টা চেষ্টা করেও কিশোর তার চাচা- চাচিকে মানাতেই পারলো না যে তার হাতে একটা ব্লেড ঢুকে গেছে। তার চাচা- চাচিও তার সাথে অভিনয় করে তার অভিনয় ধরে ফেলেছে। ডিনার শেষ করে তার চাচি তাকে মনে করে দিল তার কাজ ছিলো। বাড়ির পিছনে বিস্তর আগাছা জন্মেছে। সেইসব পরিষ্কার করতে গিয়ে কীসে যেন কামড়ে দিল তাকে।সে তার চাচা-চাচিকে বললে তারা বিশ্বাস না করে গ্লাভস পরে কাজ করতে বলে।

গ্লাভস পরে কাঠের গুড়িগুলো আনতে গেলে আবার কেমন অনূভুতি হলে সে কাঠের গুড়ি ছাড়াই চলে আসে বাড়িতে। তার চাচি তাকে আর না যেতে বলে ঘরে গিয়ে ঘুমাতে বলে। সকালে সে নাস্তার জন্য নিচে যাওয়ার সময় খেয়াল করে তার তার হাতে আর ব্যথা নেই, শুধু চুলকাচ্ছে। সে দেখলো তার হাত থেকে কনুই পর্যন্ত  চামড়া রুক্ষ বাকলের মত দেখাচ্ছে আর হলুদ রস বেরুচ্ছে কিনারাগুলো থেকে। (Tin Goyenda)

কিশোর তার চাচিকে গিয়ে দেখালে তিনি বলেন হ্যালোউইনের কস্টিউমটা ভালোই হয়েছে। এখন এইসব নিয়ে পরে না থেকে স্কুলে যেতে বলে। স্কুলের নাসের কাছে গেলে সেও বিশ্বাস না করে তাকে ক্লাসে পাঠিয়ে দেয়। তার বন্ধু মুসা, রবিন ও তাকে বিশ্বাস করে নি। সন্ধ্যায় তার চাচাকে বললেও তিনিও তার কস্টিউমটা ভালো বলে দিলেন। তারপর কিশোর একটি কুড়াল নিয়ে কাঠের গুড়িটার কাছে গিয়ে আঘাত করলো। সাথে সাথেই কিশোরের বা বাহুতে অসহ্য যন্ত্রণায় তার বাহু চেপে ধরে সে।

Tin Goyenda

মিনিট খানেক সে মাটিতে পরে থাকে। তারপর ভাবে যে তার চাচি যদি আজ এই কাঠগুলো জ্বালাতো তাইলে তার শরীরেও আগুন লাগতো। রাতে ডিনার শেষ করে কিশোরের চাচি তাকে বলে আজ রাতে আগুল জ্বালালে কেমন হয়? কয়েকটা মার্শম্যালো, কিছু চকলেট আর গ্রাহাম ক্র্যাকার আছে। কিন্তু কিশোর তাকে না করে দেয়, বলে এখন আগুন জ্বালালে আঠা গলে যাবে। কিশোরের চাচি বলে ঠিক আছে কয়েকদিন তাহলে আগুন জ্বালাবো না আমরা। (Tin Goyenda)

পরেরদিন সকালে কিশোর তার চাচি কে বলে স্কুল শেষে সে রবিনদের বাসায় যাবে। কিন্তু সে আসলে যাবে নার্সারিতে। সেই কাঠগুলোর খোজ নিতে। নার্সারিতে একটি ছেলে রীড সে কিশোরকে বলে বুড়ো অ্যাশ গাছটি থেকে বাকলগুলো পেয়েছো তুমি। গাছটিও ছিল আশি ফুট লম্বা, ওরেগন অ্যাশ। শীতকাল এলেই পাতা ঝরে যায়। আধ মরা হয়ে গিয়েছিল,তাই কাটতে হয়েছে। ঝর এলেই পরে যেত। গাছটি কোথায় থেকে নেওয়া জানতে চাইলে রীড বলে পার্ক স্ট্রীটের পুরোনো কবর গুলোর পাশের একটি অ্যাশ  গাছ এটি।

গোরস্থানের রাস্তায় পৌছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। কিশোরের পা ব্যথা হয়ে গেছে। সে তার পায়ের দিকে তাকাতেই দেখলো তার পায়ের কাছে শিকল কিলবিলিতে উঠল গাছের শিকড়, আর সেটা মাটির গভীরে ঢুকে গেল। লাফিয়ে সরে আসতেই পায়ের সাথে এক গোছা ঘাসও উঠে আসলো। রাত হয়ে এসেছে, আকাশে চাঁদ নেই, একটি তারাও নাই। কিশোর কিছুসময় হাটার পর ভুলেই গেছে কি জন্য এখানে এসেছে সে।কিশোর পা তুলতে পারছে না, মাটিতে শিকড় গেঁথে গেছে।

Tin Goyenda

কিশোরের মাথার উপর দিয়ে উঠে গেল আঙুলগুলো। আমাদের সাথে থাকো এমন একটি শব্দ ফিসফিস করে কিশোর শুনতে পাচ্ছে। হঠাৎ দুটি পরিচিত কন্ঠ কিশোর শুনতে পেল। এই দুজন তার বন্ধু মুসা আর রবিন। হ্যালোউইনের সময় তারা ছোটদের সাথে নিয়ে এখানে আসে, তাদের ভয় দেখানোর জন্য। কিশোর ডান পা এগোতেই রবিন তা দেখে তার নকল কুঠার ফেলে দৌড় দিল, সাথে অন্য যারা ছিল তারাও গেল। কিশোরের মনে হচ্ছে দুনিয়া পাল্টে যাচ্ছে। অন্য কারো ক্ষতি করতে পারবে না তোমরা বলল কিশোর। কিশোরের পায়ের পাতা মাটির গভীরে দেবে যাচ্ছে। বুকের বাকল শক্ত হচ্ছে। (Tin Goyenda)

কিশোরের হঠাৎ ঠান্ডা লাগছে। তাকিয়ে দেখে অন্ধকার। সে তার হাত পা সবকিছুই এখন অনুভব করতে পারছে। কিশোর খুশি হয়ে বলে ওরা তাকে ছেড়ে দিয়েছে। আবার মনেও হয় ছেড়ে দিয়েছে না কি আবার পুরো ব্যাপারটা ঘটবে! তখন কিশোরের মনে হল সে তার বন্ধুদের রক্ষা করেছে তাই গাছগুলোও তাকে ছেড়ে দিয়েছে। কিশোর কিছুসময় গাছগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে থেকে তার বাড়ির দিকে রওনা হয়ে গেল।

 

Bangla Book Review
এই বইটির অডিও গল্প শুনতে চাইলে Dishas Storyplate

Leave a Comment